Posts

আরোগ্য সংগীত

Image
বহুকাল আগেই মানুষ জেনেছিল সংগীতের নিরাময় ক্ষমতার কথা । প্রাচীন গ্রিক ও মিশরীয় চিকিৎসকরা বাঁশি বা তারের বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে রোগীর চিকিৎসা করত । প্রাচীন ভারতে রোগ নিরাময়ে ব্যবহৃত হতো কন্ঠধ্বনি — একই সুরে বাঁধা শব্দগুচ্ছের পুনরাবৃত্তি বা ‘ চ্যান্টিং ’ । বাংলায় সাপে কাটা রোগীর বিষ নামানোর সময় ওঝা ব্যবহার করত ঢাকের বাদ্য ও ‍‍‌আদিরসাত্মক গান। উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে নিরাময়ে সংগীতের কার্যকারতা নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা শুরু হয় ফ্রান্স , আমেরিকা ও রাশিয়ায় । গবেষণায় দেখা যায় , সংগীত রক্তচাপ কমায় , হৃৎপিন্ডের কার্ডিয়াক আউটপুট বাড়ায় , পালস-রেট কমায় এবং সাধারণত দেহের ‘প্যারাসিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম’-এর কাজে সহায়তা করে। বলা বাহুল্য , সংগীত যিনি করেন এবং যিনি শোনেন , উভয়েরই সুস্বাস্থ্য ও নিরাময়ে অবদান রাখতে পারে সংগীত। আজ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মিউজিক থেরাপি নিয়ে প্রচুর কাজ হচ্ছে। যে সংগীত একদিন ছিল নিরাময়-কলা , তা আজ ধীরে ধীরে হয়ে উঠছে নিরাময়-বিজ্ঞান। গড়ে উঠছে নতুন নতুন তত্ত্বভাবনা , আর সেগুলির উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠছে মিউজিক থেরাপির বিভিন্ন পদ্ধতি। কেউ মনে করছেন , শুধুই বাদ্যবাজনা অর্থাৎ যন

চাঁদহীন পৃথিবী

Image
পৃথিবী চাঁদহীন নয় । পৃথিবীর একমাত্র চাঁদ কোথাও হারিয়েও যায়নি , কিংবা কোনও দিন হারিয়ে যাবে তেমন সম্ভাবনার কথা জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কেউ এখনও বলেনি । তবু প্রসঙ্গটি মনে এল, যদি কোনও দিন মানুষ চাঁদের দখল নিয়ে যুদ্ধে লিপ্ত হয় , এবং সেই যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে, সেই কথা ভেবে । যুদ্ধ হতেই পারে , কারণ চাঁদের বুকে রয়েছে দুর্লভ জ্বালানি সম্পদ হিলিয়াম - ৩ আয়নের বিশাল ভান্ডার । মনে করা হয় , হিলিয়াম - ৩ হবে দ্বিতীয় প্রজন্মের পারমাণবিক জ্বালানি । যখন চাঁদের হিলিয়াম - ৩ আহরণের উপযুক্ত প্রযুক্তি মানুষের হাতে আসবে , এবং যখন পৃথিবীর জ্বালানি সম্পদ নি : শেষ হয়ে আসবে , তখন চাঁদের দখল নিয়ে যুদ্ধের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে । সেই যুদ্ধে মানুষ হয়ত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে দ্বিধা করবে না , কারণ যুদ্ধটি হবে পৃথিবী থেকে অনেক দূরে । শোনা যায় ,  প্রথম পারমাণবিক বোমাটি ফেলার পরিকল্পনা ছিল চাঁদে । পরে পরিকল্পনা পরিবর্তন করে বোমা ফেলা হয় জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরে । চাঁদে পারমাণবিক বোমা ফেলার চিন্তা আবার কারও মাথায় যে আসবে না তার নিশ্চয়তা কে দিবে ! তবে , এসব হল অনেক দূরবর্তী

স্বল্পদৈর্ঘ্য পথ — অ-ইউক্লিডীয় জ্যামিতির আলোকে

Image
কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়া গ্রামে সকাল বেলায় এক কৃষক মাঠে কাজ করছিল। একটি গাড়ি এসে ধান ক্ষেতের পাশে দাঁড়াল। এক ভদ্রলোক গাড়ি থেকে নেমে এসে কৃষককে জিজ্ঞেস করল — আচ্ছা , এখান থেকে সাঁইজীর আখড়া কত দূর ? কৃষক বলল — আপনার গাড়িটি যেদিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে সেদিকে সোজা চালিয়ে গেলে প্রায় ২৪ হাজার মাইল। আর যদি গাড়িটি ঘুরিয়ে নিয়ে ওই দিকে যান তাহলে মাত্র তিন মাইল। ভদ্রলোক একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল — তার মানে ? কৃষক বলল — আপনি যেদিকে যাচ্ছিলেন সেদিকে সোজা চলতে থাকলে একদিন ঠিকই গন্তব্যে পৌঁছে যাবেন , কারণ পৃথিবী গোলাকার। কিন্তু আপনাকে পৃথিবীর পুরো ঘের (পরিধি) ঘুরে আসতে হবে। উল্লিখিত গল্পটির আধ্যাত্মিক তাৎপর্য রয়েছে । তবে, সবচেয়ে কম দূরত্বের পথ কোনটি, তা জানতে চাওয়া সাধারণ জিজ্ঞাসার ব্যাপার । স্কুলে পড়া জ্যামিতি অনুসারে ক - বিন্দু ও খ - বিন্দুর মধ্যে সবচেয়ে কম দূরত্ব হল বিন্দু দু ' টির মধ্যে আঁকা একটি সরল রেখা । প্রায় দুই হাজার বছর আগে এই জ্যামিতিক সিদ্ধান্তটি প্রণয়ন করেছিলেন গ্রীসের গণিতবিদ ইউক্লিড । ইউক্লিড - কে ক্লাসিক্যাল জ্যামিতির প্রতিষ্ঠাতা