Posts

Showing posts with the label লাইফস্টাইল

গরু প্রোটিন কোথায় পায়

Image
স্কুলে শিখেছি, গরু তৃণভোজী প্রাণী । অর্থাৎ গরু ঘাস-খড় খেয়ে জীবন ধারণ করে । নিরামিষবাদের প্রবক্তারা বলেন, গরু যদি ঘাস-খড় খেয়ে এতো দুধ-মাংস উৎপাদন করতে পারে, তাহলে মানুষ কেন শুধু শাকসবজি খেয়ে শরীর গঠন ও রক্ষণ করতে পারবে না । তাঁদের মতে মানুষ মূলত নিরামিষভোজী প্রাণী । কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, একটি পাঁচশো কিলোগ্রাম ওজনের গরুর প্রোটিনের উৎস কী ? ঘাস আর খড়কুটো থেকেই কি গরু আহরণ করে পর্যাপ্ত প্রোটিন? আমরা জানি , শরীরে প্রোটিন উৎপাদন করতে লাগে বাইশ রকমের অ্যামিনো অ্যাসিড । এদের মধ্যে নয়টি অ্যামিনো অ্যাসিড শরীর তৈরি করতে পারে না । এগুলিকে বলা হয় ‘অপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিড’ । শরীর এগুলি পেয়ে থাকে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার থেকে । প্রাণিজ প্রোটিনে সবগুলি অ্যামিনো অ্যাসিড-ই বর্তমান থাকে । কিন্তু উদ্ভিজ্জ প্রোটিনে নয়টি অপরিহার্য অ্যামিনো এসিডের সবগুলি থাকে না , কিছু কম থাকে । সুতরাং উদ্ভিদজাত খাদ্য থেকে এগুলির চাহিদা সম্পূর্ণ পূরণ করা সম্ভব নয় ।      উল্লেখ্য , গরুকে খাবার হিসেবে যে ঘাস , খড় দেওয়া হয় তা মোটেও প্রোটিনসমৃদ্ধ নয় । প্রকৃতপক্ষে , এই সব খাবারের মধ্যে তেমন পুষ্টিকর উপাদান থাকে না । অ

অকারণ সুখ

Image
সুখ মনের এমন এক অবস্থা যা সবাই পেতে চায় । সুখের সঙ্গে সুস্থতা , স্বাচ্ছন্দ্য , আনন্দ , ভালবাসা , তৃপ্তি , এবং অন্যান্য ইতিবাচক অনুভূতি সম্পর্কিত । তা ছাড়া, বিভিন্ন ইতিবাচক অভিজ্ঞতা, যেমন লক্ষ্য-অর্জন, ইচ্ছা-পূরণ, সু-সংবাদ পাওয়া, প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটানো, ইত্যাদি নানা কারণে মানুষ সুখী হতে পারে । তৎসত্ত্বেও, একেবারে কোনও কারণ ছাড়াও মানুষ সুখের অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারে । এই ধরণের সুখকে বলা হয় অকারণ-সুখ । সুখ সম্পর্কে মানুষের সাধারণ ধারণা — আমি সুখী হব যদি যা চাই তা পাই , এবং যা চাই না তা না পাই । এই ধরণের সুখের পিছনে শর্ত থাকে, কারণ থাকে । তাই এটাকে বলা যায় সকারণ-সুখ । এই সুখ এক ধরণের মরীচিকা । কারণ , চাওয়ার শেষ নেই । একটি চাওয়া পূরণ হওয়া মাত্র আর একটি চাওয়া সামনে এসে দাঁড়ায় । সুখের দেখা আর মেলে না , বা সুখ স্থায়ী হয় না । পক্ষান্তরে , অকারণ সুখ নিঃশর্ত, স্বতঃস্ফূর্ত । তাই সদাই পরিপূর্ণ । প্রাত্যহিক জীবনে পরিচিতজনের সঙ্গে সামাজিক কুশল বিনিময়ের সময় আমরা জিজ্ঞেস করি — কেমন আছেন? উত্তর যদি হয় ‘ ভাল ’, আমরা কিন্তু আর জানতে চাই না — কেন ভাল আছেন? একই ভাবে কেউ যদি বলে , আমি সুস্থ আ

রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ আকাঙ্ক্ষা

Image
একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মানুষ অন্যান্য পশুর থেকে আলাদা । বিষয়টি হচ্ছে মানুষের আকাঙ্ক্ষা যা সীমাহীন , এবং কখনও সম্পূর্ণরূপে পূরণ হয় না । এই আকাঙ্ক্ষা মানুষকে অস্থির করে রাখে সারা জীবন । মানুষের বহু রকমের আকাঙ্ক্ষা থাকে । তবে সব আকাঙ্ক্ষার রাজনৈতিক গুরুত্ব নেই । ইংরেজ চিন্তাবিদ, দার্শনিক এবং প্রবন্ধকার বার্ট্রান্ড রাসেল তাঁর নোবেল বক্তৃতায় (১৯৫০) চার রকমের আকাঙ্খার কথা বলেছেন যেগুলি রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ । সেগুলি হচ্ছে — অর্জনলিপ্সা , প্রতিদ্বন্দ্বিতা , অহমিকা , ও ক্ষমতাপ্রীতি । অর্জনলিপ্সা হচ্ছে যত বেশি সম্ভব সম্পদের মালিক হওয়ার ইচ্ছা । জীবনধারণের পক্ষে অপরিহার্য জিনিসপত্র সংগ্রহ দিয়ে এর শুরু হয় । একটা অর্জিত হলে আর একটা চাই । যত বেশি সম্পদই অর্জন করা হোক না কেন , মানুষ সব সময় চায় আরও অর্জন করতে । তৃপ্তি চিরকাল স্বপ্ন হয়ে মানুষকে ফাঁকি দেয় । তবে অর্জনলিপ্সা ততটা দোষের নয় , যতটা দোষের প্রতিদ্বন্দ্বিতার আকাঙ্ক্ষা । বস্তুত, পৃথিবীটা এখনকার চেয়ে অনেক সুখের হতো যদি সব সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতার চেয়ে অর্জনলিপ্সা শক্তিশালী হতো । কিন্তু প্রকৃত অবস্থা হচ্ছে , বহু মানুষ আছেন যাঁরা স

বাড়ি বদল

Image
গভীর রাতে এক চোর গৃহস্থের বাড়িতে সিঁধ কেটে প্রবেশ করল । গৃহকর্তা ঘুমোচ্ছিল । আসলে না , সে ঘুমের ভান করছিল । চোখ সামান্য খোলা রেখে দেখছিল , চোর কী করছে । অন্য কারও কাজে হস্তক্ষেপ করা তার স্বভাব নয় । তাছাড়া , চোর তো তার ঘুমে বাধা দিচ্ছে না , সে কেন চোরের কাজে বাধা দিবে! চোরকে তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে দেওয়াই ভাল । গৃহকর্তাকে চোরের অদ্ভুত মনে হচ্ছিল । সব জিনিসপত্র ঘর থেকে বের করা হচ্ছে । মাঝে মাঝে কিছু জিনিস হাত থেকে পড়ে শব্দ হচ্ছে । তা সত্ত্বেও গৃহকর্তার ঘুম ভাঙছে না । একবার তার মনে হল , এ ধরণের ঘুম তো সম্ভব যখন কেউ জেগে ঘুমায় । কী অদ্ভুত মানুষ , কিছুই বলছে না! তার যা-কিছু ছিল ঘরে সবই বের করা হয়েছে । চোর সব জিনিসপত্র ঠেলা গাড়িতে তুলে বাড়ির দিকে চলছে । হঠাৎ মনে হল , কেউ তার পিছনে হাঁটছে । সে পিছন ফিরে দেখল , এই সেই মানুষ যে এতক্ষণ ঘুমোচ্ছিল । সে তাকে বলল , ‘ তুমি কেন আমার পিছু নিয়েছ ?’ গৃহকর্তা বলল , ‘ না , আমি তো তোমার পিছু নেইনি , আমি বাড়িবদল করছি । তুমি আমার সব কিছু নিয়েছ , এখন ওই বাড়িতে আমি কী করব । তাই আমিও চলছি তোমার সঙ্গে । ’ চোর উদ্বিগ্ন হয়ে বলল , ‘ আমাকে ক্ষমা ক

রঙে রঙে বোনা

Image
দৃষ্টিক্ষম মানুষের জন্য ঈশ্বরের সুন্দরতম উপহার হচ্ছে রং । জলে, স্থলে, আকাশে সর্বত্র রঙের প্রাচুর্য । চারপাশে যা-কিছু আমাদের চোখে পড়ে তা আসলে বিভিন্ন রঙের পোঁচ  মাত্র । রং সব কিছুকে সৌন্দর্যমন্ডিত করে । রংবিহীন সৌন্দর্য যেন আমাদের নয়, অন্য কোনও জগতের । সেই আদিম কাল থেকেই মানুষ প্রকৃতির রঙের পরিবেষ্টনে প্রতিপালিত হয়ে আসছে । তাই মানুষের জীবনে রঙের প্রভাব অপরিসীম । রং এক ধরণের শক্তি যা মানুষের শরীর , মন , আবেগকে নানাভাবে প্রভাবিত করে । যেমন , লাল রং দেহে রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি করে , হৃদস্পন্দন দ্রুততর করে । নীল রং লালের বিপরীত — দেহে প্রশান্তি আনে , মনে প্রেরণা সঞ্চার করে । পাশ্চাত্যের বহু দেশে ‘কালার থেরাপি’ ব্যবহার করা হয় দেহ-মনের রোগ নিরাময়ে । রঙের মাধ্যমে মানুষ তার মনোভাব প্রকাশ করতে পারে । অনেক সময়, যে-কথা বাক্য দিয়ে প্রকাশ করা যায় না, তা রং দিয়ে প্রকাশ করা যায় । চিত্রশিল্পীরা যেমনটা করে থাকেন তাঁদের চিত্রকর্মে । রং এক গভীর রহস্যজনক ভাষার নাম । রং মানুষের ‘নন-ভার্বাল কমিউনিকেশন’ - এর ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে । এই ভাষায় কথা বলতে হলে রঙের অর্থ জানতে হয় । বলাবাহুল্য , র

অন্ধকার ও ইন্দ্রিয় অনুভূতি

মানুষ তার চার পাশের জগৎ সম্পর্কে জানতে পারে যে দেহযন্ত্রের সাহায্যে তার নাম ইন্দ্রিয় । পাঁচটি ইন্দ্রিয় রয়েছে মানুষের শরীরে : চক্ষু (দর্শনেন্দ্রিয়), ত্বক (স্পর্শেন্দ্রিয়), কর্ণ (শ্রবণেন্দ্রিয়), জিহ্বা (রসনেন্দ্রিয়) ও নাসা (ঘ্রাণেন্দ্রিয়) । পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের প্রধান কাজ আমাদের দেহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা । ইন্দ্রিয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী হচ্ছে দর্শনেন্দ্রিয়, আর সবচেয়ে দুর্বল সম্ভবত ঘ্রাণেন্দ্রিয় । তবে এরা একে অপরের সম্পূরক । একটি ইন্দ্রিয় দুর্বল হলে অন্য ইন্দ্রিয় আরও জোরালো হয়ে উঠে । এই কারণেই দৃষ্টিশক্তিহীন মানুষের অন্য ইন্দ্রিয়গুলি প্রখর থাকে । রাতের অন্ধকারে যখন আমাদের ভিজ্যুয়াল সেন্স বা দর্শনেন্দ্রিয় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে, তখন অন্যান্য ইন্দ্রিয়গুলো সাময়িকভাবে আরও প্রবল হয়ে উঠে । স্পর্শ-, ঘ্রাণ-, বিশেষত শ্রবণ-অনুভূতি অনেক বেড়ে যায় । অন্ধকারে শব্দ ও নৈঃশব্দ্য উভয়েরই অ্যা মপ্লিফিকেশন বা বিবর্ধন ঘটে । তাই রাতের বেলায় আকাশ, নক্ষত্র, বৃক্ষ, ঝর্ণা, নদী, সমুদ্র মুখর হয়ে উঠে । মহাকাশের ‘ নৈঃশব্দ্য - সংগীত ’ শোনা যায় কেবল রাতের অন্ধকারেই । অন্ধকারে রসনেন্দ্রিয় ও ঘ্রাণেন্দ্রিয় শক্তি