Posts

অসহায় কেন মানবশিশু

Image
মানবশিশু ভূমিষ্ঠ হয় শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল অপরিণত অসহায় এক দেহ নিয়ে । অন্যদিকে , নিম্নশ্রেনির জন্তুরা ভূমিষ্ঠকাল থেকেই হয় মানবশিশু অপেক্ষা অধিকতর পরিণত । বিজ্ঞানীরা মনে করেন , মানবশিশুর বৃহৎ মস্তকই এর কারণ । দ্য প্রপোরশনস অব দ্য হেড/লেওনার্দো দা ভিঞ্চি একটু পিছন ফিরে মানুষের বিবর্তনের ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে ,  মানুষের মাথার আকার চিরদিন আজকের মত বৃহৎ ছিল না । বিবর্তনের ধারায় সে-দিনের বনমানুষ যতই আজকের মানুষ হওয়ার দিকে এগিয়েছে — ততই বেড়েছে তার মগজের পরিমান — আর তার সঙ্গে বড় হয়েছে মাথার খুলিটাও । মানুষের নিকটতম আত্মীয় শিম্পাঞ্জির কথাই ধরা যাক । বর্তমানে একটি শিম্পাঞ্জির মগজের গড় ওজন হল ৩৮৪ গ্রাম । আর একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মগজের গড় ওজন হল ১ , ৩৫২ গ্রাম , যা শিম্পাঞ্জির মগজের তুলনায় প্রায় তিনগুন বেশি । ধারণা করা হয় , ৮০০ হাজার থেকে ২০০ হাজার বছর আগে মানুষের মগজের পরিমান দ্রুত বেড়ে যায় , আর সেই সঙ্গে বড় হয় মগজ রাখার পাত্রটি অর্থাৎ মাথার খুলি বা করোটি । মগজের পরিমান বেড়ে যাওয়ায় মানুষের মস্তিস্ক আরও অনেক বেশী তথ্য প্রসেস করতে সক্ষম হল । মানুষ বিমূর্ত চিন্ত

আমিই সে — আমিই পরম সত্য

Image
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতির ফলে আজ মানুষ পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিধর প্রাণীতে পরিণত হয়েছে । তবু কি আজকের মানুষ পেরেছে নিজেকে বিশ্ব-ব্রহ্মান্ডের নিয়ন্তা হিসেবে ঘোষণা করতে! অথচ হাজার বছর আগের মানুষ, উপনিষদের ঋষি সূর্যকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘হে দীপ্তিমান সূর্য, আমি সেই পুরুষ যিনি তোমাকে এইরূপ করে সৃষ্টি করেছেন । ’ এই উক্তি থেকেই এসেছে, ‘সোহম্’ বা ‘সোহং’, অর্থাৎ ‘আই অ্যাম দ্যাট ’ বা ‘আমিই সে’ । যীশু খ্রীস্ট বলেছিলেন, ‘আব্রাহামের আগে, আমিই ছিলাম’, এবং ‘আমি আর পিতা এক’ । পারশ্যের সুফী সাধক মানসুর আল-হাল্লাজ ধ্যানমগ্ন অবস্থায় উচ্চারণ করেছিলেন, ‘আনাল হাক্ক’ অর্থাৎ ‘আমিই পরম সত্য’ । বাংলার বাউল কবি হাসন রাজার গানে আছে, ‘হাসন রাজায় জিজ্ঞাস করে, কানাইয়া কোন জন । ভাবনা চিন্তা কইরা দেখি কানাই যে হাসন । ’ অর্থাৎ ‘আমিই কানাই , আমিই ঈশ্বর’ । কেউ যদি বলে বেড়ায় ‘আমিই ঈশ্বর’, তাহলে মনে হতে পারে লোকটি হয় মস্ত বড় আহাম্মক, নয় তো প্রচন্ড অহংকারী । কিন্তু যাঁরা এধরনের কথা বলেছেন তাঁরা তো আহাম্মক ছিলেন না, অহংকারীও ছিলেন না । তাঁরা ছিলেন দিব্যজ্ঞানী সাধক । তাঁদের সাধনার বিষয় ছিল অহংকার বিসর্জন দিয়ে পরম

বাউল ভাব — এক অন্তর্গত ঈশ্বরের আরাধনা

Image
আমরা যখন সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশে কোন ও প্রার্থনা বা অর্ঘ্য নিবেদন করি, তখন মনের অজান্তেই আমাদের দৃষ্টি উপর দিকে চলে যায় । যেন, আমাদের মাথার উপরে যে আকাশ, সেখানেই তিনি থাকেন । কিন্তু পৃথিবীর সবদিকেই তো আকাশ, এবং ঘুর্ণায়মান পৃথিবী থেকে দেখা সেই আকাশের অবস্থান পরিবর্তিত যাচ্ছে প্রতি মুহুর্তে । এমন অবস্থায়, আকাশের কোন ও নির্দিষ্ট দিকে তাঁর অবস্থান নিরুপন করা কি সম্ভব? তাহলে কোন দিকে নিবেদন করব তাঁর প্রতি আমাদের ভক্তি-অর্ঘ্য, কোথায় জনাব আমাদের প্রার্থনা, কোথায়ই বা তাঁর নিবাস? সৃষ্টিকর্তা কোথায় থাকেন, সে সম্পর্কে একটি গল্প প্রচলিত আছে । সেই গল্পে আছে : সৃষ্টির প্রথম যুগে ঈশ্বর মানুষের বেশেই মানুষের সমাজে বাস করতেন , আর মানুষের ভক্তি-ভালবাসায় সিক্ত হয়ে দিন কাটাতেন । কিন্তু এক সময় কিছু সমস্যা দেখা দিল । সমস্যা দেখা দিল মানুষের বহুবিধ দাবি পূরণ করতে গিয়ে । দাবির যেন শেষ নেই ; এটা পাওয়া হল তো ওটা চাই , ওটা পাওয়া হল তো ঐটা চাই। প্রতিদিন অজস্র সহস্র প্রার্থনা । কিন্তু তাতেও সমস্যা ছিল না , কারণ তিনি তো সর্বশক্তিমান । সমস্যা দেখা দিল অন্যত্র । ধরুন, একজন কৃষক প্রার্থনা করল , ‘ হে