Posts

নৈঃশব্দ্য সংগীত

মানুষ যে ভাষায় কথা বলে তা সংকীর্ণ অর্থের গন্ডিতে বাঁধা । এই ভাষা মানব মনের গভীরতর আবেগ - অনুভূতি সঠিকভাবে প্রকাশ করতে সক্ষম নয় । ‘ ভালবাসি ’ শব্দটির কথাই ধরা যাক । আমরা ফুল ভালবাসি , প্রিয়জনকে ভালবাসি , ঈশ্বরকেও ভালবাসি । কিন্তু সব ভালবাসা কি একরকম হয় ? ভালবাসার মাত্রা প্রকাশ করতে আমরা ‘ বেশি ’, ‘ আরও বেশি ’, ‘ সবচেয়ে বেশি ’ ইত্যাদি শব্দ বা শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করে থাকি । কিন্তু তার চেয়েও বেশি ভালবাসা প্রকাশের ভাষা আমাদের শব্দভাণ্ডারে নেই । ভাষার এই সীমাবদ্ধতা কিছুটা অপসারিত হয় যখন ভাষার সঙ্গে যুক্ত হয় ছন্দ ও সুর ; সৃষ্টি হয় কবিতা ও গান । পৃথিবীতে ছন্দ - সুর প্রথম সৃষ্টি হয়েছিল মহর্ষি বাল্মীকির বেদনায় বিদারিত অন্তরে । তখন তিনি বলেছিলেন , ‘ মানবের জীর্ণ বাক্যে মোর ছন্দ দিবে নব সুর , অর্থের বন্ধন হতে নিয়ে তারে যাবে কিছু দূর । ’ মানুষের ভাষা অর্থের বন্ধনে বাঁধা । ভাষাকে ধরাবাঁধা অর্থের বন্ধন হতে মুক্ত করে নতুনতর অর্থ প্রদানের উদ্দেশ্যেই ভাষার সঙ্গে যুক্ত হয় সুর । বাণী ও সুরের মেলবন্ধনে সৃষ্টি হয় গান । বাণী ও সুরের ডানায় ভর করে মনের ভাব পায় আরও কিছুদূর উড়িবার আকাশ । তবে বাণী

আরোগ্য সংগীত

Image
বহুকাল আগেই মানুষ জেনেছিল সংগীতের নিরাময় ক্ষমতার কথা । প্রাচীন গ্রিক ও মিশরীয় চিকিৎসকরা বাঁশি বা তারের বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে রোগীর চিকিৎসা করত । প্রাচীন ভারতে রোগ নিরাময়ে ব্যবহৃত হতো কন্ঠধ্বনি — একই সুরে বাঁধা শব্দগুচ্ছের পুনরাবৃত্তি বা ‘ চ্যান্টিং ’ । বাংলায় সাপে কাটা রোগীর বিষ নামানোর সময় ওঝা ব্যবহার করত ঢাকের বাদ্য ও ‍‍‌আদিরসাত্মক গান। উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে নিরাময়ে সংগীতের কার্যকারতা নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা শুরু হয় ফ্রান্স , আমেরিকা ও রাশিয়ায় । গবেষণায় দেখা যায় , সংগীত রক্তচাপ কমায় , হৃৎপিন্ডের কার্ডিয়াক আউটপুট বাড়ায় , পালস-রেট কমায় এবং সাধারণত দেহের ‘প্যারাসিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম’-এর কাজে সহায়তা করে। বলা বাহুল্য , সংগীত যিনি করেন এবং যিনি শোনেন , উভয়েরই সুস্বাস্থ্য ও নিরাময়ে অবদান রাখতে পারে সংগীত। আজ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মিউজিক থেরাপি নিয়ে প্রচুর কাজ হচ্ছে। যে সংগীত একদিন ছিল নিরাময়-কলা , তা আজ ধীরে ধীরে হয়ে উঠছে নিরাময়-বিজ্ঞান। গড়ে উঠছে নতুন নতুন তত্ত্বভাবনা , আর সেগুলির উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠছে মিউজিক থেরাপির বিভিন্ন পদ্ধতি। কেউ মনে করছেন , শুধুই বাদ্যবাজনা অর্থাৎ যন

চাঁদহীন পৃথিবী

Image
পৃথিবী চাঁদহীন নয় । পৃথিবীর একমাত্র চাঁদ কোথাও হারিয়েও যায়নি , কিংবা কোনও দিন হারিয়ে যাবে তেমন সম্ভাবনার কথা জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কেউ এখনও বলেনি । তবু প্রসঙ্গটি মনে এল, যদি কোনও দিন মানুষ চাঁদের দখল নিয়ে যুদ্ধে লিপ্ত হয় , এবং সেই যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে, সেই কথা ভেবে । যুদ্ধ হতেই পারে , কারণ চাঁদের বুকে রয়েছে দুর্লভ জ্বালানি সম্পদ হিলিয়াম - ৩ আয়নের বিশাল ভান্ডার । মনে করা হয় , হিলিয়াম - ৩ হবে দ্বিতীয় প্রজন্মের পারমাণবিক জ্বালানি । যখন চাঁদের হিলিয়াম - ৩ আহরণের উপযুক্ত প্রযুক্তি মানুষের হাতে আসবে , এবং যখন পৃথিবীর জ্বালানি সম্পদ নি : শেষ হয়ে আসবে , তখন চাঁদের দখল নিয়ে যুদ্ধের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে । সেই যুদ্ধে মানুষ হয়ত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে দ্বিধা করবে না , কারণ যুদ্ধটি হবে পৃথিবী থেকে অনেক দূরে । শোনা যায় ,  প্রথম পারমাণবিক বোমাটি ফেলার পরিকল্পনা ছিল চাঁদে । পরে পরিকল্পনা পরিবর্তন করে বোমা ফেলা হয় জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরে । চাঁদে পারমাণবিক বোমা ফেলার চিন্তা আবার কারও মাথায় যে আসবে না তার নিশ্চয়তা কে দিবে ! তবে , এসব হল অনেক দূরবর্তী