আলেকজান্ডার ও দিওগেনেস — জীবনের অন্তিম লক্ষ্য
কাছে এসে মাথা নত করে আলেকজান্ডার গুরুদেবকে
অভিবাদন করলেন।
দিওগেনেস মুখে হাসি এনে জিজ্ঞেস করলেন — কী আলেকজান্ডার, এবার
কোন দেশের উপর তোমার নজর পড়ল?
আলেকজান্ডার বিনীত কন্ঠে বললেন — গুরুদেব, এবার যাচ্ছি
ভারত উপমহাদেশ জয় করতে, আমাকে আশীর্বাদ করুন।
দিওগেনেস স্মিত হেসে বললেন — আশীর্বাদ তো করলাম। এখন বলো, এরপর যাবে কোন
দেশ বিজয়ে?
আলেকজান্ডার একটু চিন্তার ভান করে বললেন, ভাবছি এরপর যাব পূর্ব এশিয়ার দিকে।
দিওগেনেস এবার জানতে চাইলেন, তারপর কোন দেশে যাবে বলে ভাবছ?
আলেকজান্ডার একটু ভেবে বললেন, গোটা পৃথিবীটাই জয় করার পরিকল্পনা রয়েছে
আমার, গুরুদেব।
দিওগেনেস বুঝতে পারলেন দেশ জয় করাটা ওর নেশায় পরিণত হয়েছে, বললেন — পৃথিবী তো মাত্র একটা, সেটা জয় করা হয়ে গেলে জয় করার মতো আর কিছুই যে থাকবে না। তখন কী করবে নিজেকে ব্যস্ত রাখার জন্য, হে মহান আলেকজান্ডার?
এবার আলেকজান্ডার চিন্তায় পড়ে গেলেন। সত্যিই তো, কী করবেন তিনি, তখন তো আর কোনও দেশই জয় করার জন্য অবশিষ্ট থাকবে না! নিজেকে সামলে নিয়ে আলেকজান্ডার বললেন, গুরুদেব, এরপর আর যুদ্ধ নয়; এরপর শুধু রিল্যাক্স, শুধু বিশ্রাম আর আরাম!
তখন দিওগেনেস হেসে বললেন, রিল্যাক্স করাই যদি তোমার জীবনের অন্তিম লক্ষ্য হয়ে থাকে, তাহলে এক্ষণই কেন যোগ দিচ্ছ না আমার সঙ্গে! আমি তো সেটাই করছি জীবন ভর, অথচ সেজন্য একটি দেশও জয় করতে হয়নি আমাকে!
ভাগ্যের নির্মম পরিহাস — বিশ্রাম নেবার মতো অবসর আর পাননি
আলেকজান্ডার। ভারত থেকে ফেরার কিছু দিন পরই, মাত্র বত্রিশ-তেত্রিশ
বছর বয়সে, হঠাৎ শারীরিক অসুস্থতায় তিনি মারা যান।