আসব যাব চিরদিনের সেই আমি
১৯৪১ সালের ২২ শ্রাবণ। সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মৃত্যুশয্যায়। জীবনের শেষ কয়েকটি মুহূর্ত। চলছে অবিরাম
মন্ত্রোচ্চারণ — শান্তং শিবং অদ্বৈতম্। কবি নিমীলিত
নেত্রে ধ্যানমগ্ন। একজন শুভার্থী
রবীন্দ্রনাথকে পরামর্শ দিলেন — ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করুন, এটাই যেন হয় আপনার শেষ
জীবন, আর যেন ফিরে আসতে না হয় এই দুর্দশাগ্রস্ত পৃথিবীতে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রয়াত হয়েছেন প্রায় আশি বছর হয়ে এল। ইতিমধ্যে তিনি অন্য কোনও পরিচয়ে ফিরে এসেছেন কি না তা কেউ জানে না। তবে কবির ফিরে আসার সেই আকাঙ্ক্ষা আজও ব্যক্ত হয় তাঁর গানে:
আবার যদি ইচ্ছা কর আবার আসি ফিরেদুঃখ-সুখের ঢেউ-খেলানো এই সাগরের তীরে। ...আবার তুমি ছদ্মবেশে আমার সাথে খেলাও হেসে —নতুন প্রেমে ভালোবাসি আবার ধরণীরে॥
অথবা,
তখন কে বলে গো সেই প্রভাতে নেই আমি।সকল খেলায় করবে খেলা এই আমি — আহা,নতুন নামে ডাকবে মোরে, বাঁধবে নতুন বাহু-ডোরে,আসব যাব চিরদিনের সেই আমি।
ফিরে আসার আকাংখা শুধু কবিমনের আকুলতা নয়। ‘ফিরে আসা’ প্রকৃতির নিয়ম। যে-পাতা ঝরে যায় হেমন্তের হিমে তা আবার ফিরে আসে বসন্তের ডালে। ▣
✍অসীম দে
গুয়েল্ফ, অন্টারিও, কানাডা