মেঘ বৃষ্টি তুষার
জলকণা দিয়ে
তৈরি হয় মেঘ। মেঘেরা দলে দলে আকাশতলে ভেসে চলে। চলার পথে কোথাও ঝরায় বৃষ্টি, কোথাও বা তুষার। ঈশ্বর যখন ধরিত্রীকে ‘কলুষমুক্ত’ করতে চান, শান্তিবারি দিয়ে আশীর্বাদ করতে চান,
তখন মেঘ থেকে বর্ষিত হয় বৃষ্টি কিংবা তুষার।
বৃষ্টিপাতের সময় মেঘ-নিংড়ানো জল নেমে আসে — ফোঁটায় ফোঁটায়। তুষারপাতের সময় মেঘ নিজেই নেমে আসে — ছোট ছোট টুকরোয় বিভক্ত হয়ে। ঝরে-পড়া মেঘের টুকরোকে বলা হয় স্নোফ্ল্যাক্স বা তুষারফলক — পাখির পালকের মতো হালকা, ষড়ভুজাকার তুষারকণা।
বৃষ্টি পড়ে
সশব্দে, ঝমঝমিয়ে। জলকলরবে মুখর বৃষ্টিপাত। তুষার নামে নিঃশব্দে, ধীরগতিতে। মৌনতায় মুখর তুষারপাত।
তুষারপাতের সৌন্দর্য মানুষকে মুগ্ধ করে। তুষার
নিজে সুন্দর, যাকে আবৃত করে তাকেও সুন্দর করে।
তুষারপাতের দৃশ্য অবলোকন মানুষকে নৈঃশব্দ্যের ভাষা অনুধাবনে অনুপ্রাণিত
করে। নৈঃশব্দ্যের
ভাষা বুঝতে না পারলে মানুষের মুক্তি হয় না। পারস্যের সুফি সাধক মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি বলেছেন —
‘Silence is the language of god, all else is poor translation.’ নৈঃশব্দ্য
এমন একটি ভাষা, যে ভাষায় ঈশ্বর কথা বলেন, আর অন্য সবকিছু দুর্বল তর্জমা মাত্র। তাই কেবল নৈঃশব্দ্যের মাধ্যমেই ঈশ্বরের
সঙ্গে ভাব বিনিময় করা সম্ভব।
তাছাড়া, যেমনটি বলেছেন লেবানিজ-মার্কিন কবি খলিল জিব্রান — ‘যখন তুমি নৈঃশব্দ্যের প্রবাহ থেকে জল পান করতে পারবে, শুধুমাত্র তখনই তুমি গানে মুখর হবে’। যাঁরা নৈঃশব্দ্যের গভীরতা ও তাৎপর্য উপলব্ধি করতে পারেন, পরিতৃপ্ত আনন্দময় জীবনের সন্ধান তাঁরাই পান। ▣