অনুভব একটি ভাষার নাম
পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাব ঘটেছে প্রায় ২০০ হাজার বছর
আগে। কিন্তু মানুষ স্পষ্টভাবে উচ্চারিত গ্রন্থিবদ্ধ ভাষায়
কথা বলতে শুরু করেছে মাত্র ৪০ হাজার বছর আগে। গ্রন্থিবদ্ধ ভাষা
সৃষ্টির আগে মানুষ মূলত যে-ভাষায় কথা বলত তার নাম ‘অনুভব’। আজও এই ভাষায় মানুষ কথা
বলে প্রকৃতির সঙ্গে, ঈশ্বরের সঙ্গে — প্রেমে ও প্রার্থনায়। ‘অনুভব’
কোনও উচ্চারিত ভাষা নয়, নির্বাক নীরবতাই এই
ভাষার অবলম্বন।
মানুষ মানুষের সঙ্গে মনের ভাব আদান-প্রদানের
জন্য যে যোগাযোগ পন্থা অবলম্বন করে থাকে তা হতে পারে বুদ্ধিবৃত্তিক কিংবা
হৃদয়বৃত্তিক।
বুদ্ধিবৃত্তিক যোগাযোগকে বলা হয় ‘কমিউনিকেশন’। এই যোগাযোগ হয়
গ্রন্থিবদ্ধ ভাষায়, যেমন বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি, ইত্যাদিতে। এই ভাষা সচেতন মনের ভাষা। সচেতন মন নিয়ন্ত্রিত হয় মস্তিস্ক
দ্বারা। তাই বুদ্ধিবৃত্তিক যোগাযোগে বার্তা প্রেরিত হয়
মস্তিস্ক থেকে মস্তিস্কে।
হৃদয় দিয়ে হৃদি অনুভব |
হৃদয়বৃত্তিক যোগাযোগের নাম ‘কমিউনিয়ন’। আর যে ভাষায় এই যোগাযোগ সম্পন্ন হয় তার নাম ‘অনুভব’। অনুভব অবচেতন মনের ভাষা। অনুভব সচেতন মনের
নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। এই ভাষায় আলাপন হয় নির্বাক নীরবতায়।
অনুভব — হৃদয়ের ভাষা। এই ভাষায় হৃদয় কথা বলে হৃদয়ের সঙ্গে। বিনা বাক্যে বার্তা প্রেরিত হয় হৃদয় থেকে হৃদয়ে। মানুষ হৃদয় দিয়ে করে হৃদি অনুভব।
অনুভব — আত্মার ভাষাও বটে। এই ভাষায় জীবাত্মা কথা বলে পরমাত্মার
সঙ্গে। ▣
✍অসীম দে
গুয়েল্ফ, অন্টারিও, কানাডা