কে বেশি সুন্দর? নারী না পুরুষ?

প্রকৃতি প্রাণীজগতে বিপরীত লিঙ্গের সমাবেশ ঘটিয়েছে সবাইকে নানা ভাবে সাজিয়ে সুন্দর করেছে পরস্পরের কাছে আকর্ষণীয় করেছে

ময়ূরের বর্ণাঢ্য পেখম, কোকিলের মিষ্টি কুহুগান, জোনাকির মায়াবী আলো, সিংহের অভিজাত কেশর, হরিণের হিরন্ময় শিং, বন মোরগের উদ্ধত লাল ঝুঁটি এ সবই হল পুরুষপ্রাণীর অলংকার প্রকৃতিতে স্ত্রীপ্রাণীর কোনও অলংকার নেই প্রকৃতিতে স্ত্রীপ্রাণী নিরাভরণ নিরলংকার  এর মানে এই নয় যে, পুরুষেরা নারীজাতির চেয়ে অধিক সুন্দর এর মানে হল, সুন্দর হওয়ার জন্য পুরুষের প্রয়োজন বাড়তি সাজসজ্জা, কিন্তু নারী সুন্দর বিনা আভরণে নারী এমনি সুন্দর নারী, নারী হওয়ার কারণেই সুন্দর

woman by rabindranath tagore
নারী/রবীন্দ্রনাথ 

সুন্দর হওয়ার জন্য নারীর কোনও অলংকারের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু সুন্দর হওয়ার জন্য পুরুষের চাই পেখম, কেশর, শিং, ঝুঁটি, ইত্যাদি অলংকারকিন্তু দুর্ভাগ্য পুরুষ মানুষের; পেখম, কেশর, শিং, ঝুঁটি এসব কিছুই তার নেই। তাই একসময়, বিশেষ করে শ্রীকৃষ্ণের যুগে, পুরুষমানুষ নানা রকমের অলংকার পরত সেটাই ছিল যুক্তিসংগত। কিন্তু পরবর্তী কালে, চতুর পুরুষ অলংকারের সমস্ত ভার নারীর কাঁধে চাপিয়ে দিয়ে নিজেকে ভারমুক্ত করেছে।

স্বভাবত, পুরুষ সক্রিয় এবং নারী নিশ্চেষ্ট। তাই প্রকৃতি নারীকে মোহিনী রূপে সৃষ্টি করেছে মানব প্রজাতির অস্তিত্বের ধারা বজায় রাখার স্বার্থে। নারী ও পুরুষের মধ্যকার প্রকৃতিদত্ত এই বৈষম্যটুকু সুন্দর। এই বৈষম্যের কারণেই নারী সুন্দর হয়েছে। আমি এই বৈষম্যের বন্দনা করি। আমি এই বৈষম্য উদযাপন করি। 

অসীম দে
গুয়েল্ফ, অন্টারিও, কানাডা 

Popular posts from this blog

শুক্লপক্ষ ও কৃষ্ণপক্ষের চাঁদ চেনার উপায়

সীমার মাঝে অসীমের প্রকাশ — সৃষ্টিতত্ত্বের মূলভাব

অমাবস্যা ও পূর্ণিমা — চন্দ্রসূর্যের মিলন ও বিরহ তিথি

তেল মাহাত্ম্য

ঈশ্বর, প্রকৃতি ও রবীন্দ্রনাথ

রাসলীলা মাহাত্ম্য

আঁধারের রূপ ও বিপন্ন অন্ধকার

আধ্যাত্মিকতা — পাশ্চাত্য ভাবধারার আলোকে

সূর্য উপাসনা

হৃদয়-দর্পনে দেখা