অন্তর মম বিকশিত করো
ওলন্দাজ
চিত্রশিল্পী ভিনসেন্ট ভ্যান গগ গাছের ছবি আঁকতে ভালবাসতেন। তাঁর আঁকা গাছগুলো এত
উঁচু হতো যে, সেগুলো যেন
আকাশের নক্ষত্রদের ছুঁয়ে যেত। তাঁর ‘দ্য স্টারি নাইট’ এমনই এক বিখ্যাত চিত্রকর্ম।
সমালোচকরা বলতেন, ‘এ সবই ফালতু কল্পনা! গাছ কি কখনও এত উঁচু
হতে পারে?’ ভ্যান গগ মৃদু হেসে জবাব দিতেন, ‘আমি জানি। আর আমি এটাও জানি যে, The
trees are the longings of the earth to transcend the stars. I am painting the
longing, not the trees।’
![]() |
‘দ্য স্টারি নাইট’/ভ্যান গগ |
চেতনার বিবর্তন
জিন বা বংশাণুর উপর নির্ভর করে না; এটি নির্ভর করে ব্যক্তির ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষার উপর। মানুষের
স্বাধীন আকাঙ্ক্ষা তার চেতনাকে আকাশছোঁয়া উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে কিংবা পথের ধূলায়
নামিয়ে আনতে পারে। সবই নির্ভর করে ব্যক্তির ইচ্ছা ও পছন্দের উপর।
চেতনা বিকাশের
একটি পথ হতে পারে অন্তরসত্তার মধ্যে মহাজগতের পরমসত্তার ঐশী স্বরূপ ধারণ করার
আকাঙ্ক্ষা। এই আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হলে মানুষ বুঝতে পারে, সে পরমসত্তার মধ্যে রয়েছে এবং
পরমসত্তা তার মধ্যে। তখন মানুষ অন্যদেরও পরমসত্তার অংশ হিসেবে দেখতে শিখবে। এর ফলে
ক্ষমা, প্রীতি ও সহিষ্ণুতা মানুষের জন্য সহজতর হবে। এই
সত্যের নাম আত্মতত্ত্ব বা আত্মদর্শন। এই সত্যকে অন্তরে যথার্থ উপলব্ধি করার
মাধ্যমে মানুষের অন্তরচেতনার বিকাশ সম্ভব।
বাংলার মরমী কবি
লালন সাঁই বলেছেন, ‘আত্মতত্ত্ব যেই জেনেছে, দিব্যজ্ঞানী সেই হয়েছে।‘ কিন্তু বর্তমান সময়ে মানুষের চেতনায় মনস্তত্ত্বই প্রধান; আত্মতত্ত্বের চর্চা প্রায় অনুপস্থিত। আত্মতত্ত্বের অনুধাবন ও অনুশীলনের
মাধ্যমে আজকের মনস্তত্ত্বনির্ভর মানুষ থেকে উদ্ভূত হতে পারে বিকশিত চেতনাসম্পন্ন,
দিব্যজ্ঞানী এক নতুন আধ্যাত্মিক মানুষ।