নমস্কার নমস্তে — অভিবাদনে আধ্যাত্মিকতা
নমস্কার একটি অভিবাদনসূচক শব্দ। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ পরস্পরকে অভিবাদন জানায় এই শব্দটি
দিয়ে। বিষয়টি আধুনিক ‘হাই-হ্যালো’র মতো মনে হলেও ‘নমস্কার’ বা ‘নমস্তে’ বলে অভিবাদন জ্ঞাপন করার মধ্যে অন্যরকম তাৎপর্য
নিহিত থাকে।
‘নমস্কার’ ও ‘নমস্তে’ শব্দ দুটি এসেছে সংস্কৃত ‘নমস্’ থেকে। নমস্ + কৃ (করা)
= নমস্কার, অর্থাৎ নমস্ করা। নমস্ + তে (তোমাকে)
= নমস্তে, অর্থাৎ তোমাকে নমস্। এবার দেখা যাক, সংস্কৃত 'নমস্'
শব্দটির অর্থ কি।
জার্মানি থেকে প্রকাশিত একটি সংস্কৃত-ইংরেজি অভিধানে ‘नमस्’ (নমস্) শব্দটির মানে করা হয়েছে ‘adoration’, যার বাংলা অর্থ উপাসনা, শ্রদ্ধা, বন্দনা, আরাধনা, ইত্যাদি।
প্রাচীন পারস্যের ভাষায় ‘নামাজ’ নামে একটি শব্দ ছিল যার অর্থ উপাসনা। সেই সময় অগ্নি উপাসনা সংক্রান্ত আচার-অনুষ্ঠানকে নামাজ বলা হত।
ভাষাতত্ত্ববিদরা মনে করেন, সংস্কৃত ‘নমস্’
এবং ফারসি ‘নামাজ’ শব্দ
দুটি সমার্থক ও সমগোত্রীয়।
উল্লেখ্য, সংস্কৃত ও ফারসি উভয়ই একই প্রত্ন-ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা গোত্রের অধিভুক্ত। তাই এই দুই ভাষাতে একই ধরনের মৌলিক শব্দ রয়েছে অজস্র।
অঞ্জলি মুদ্রা |
অভিবাদনে ‘নমস্তে’ বা ‘নমস্কার’ ব্যবহার করা এক ধরনের আধ্যাত্মিক প্রতীকতা,
যার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় — তুমি ও আমি এক
অদ্বৈত ঐশী সত্তার অংশীদার। আমি
তোমার অন্তরস্থ সেই সত্তাকে অভিবাদন করি এবং তার বন্দনা করি। ▣
✍অসীম দে
গুয়েল্ফ, অন্টারিও, কানাডা