কৃতজ্ঞতাবোধের চর্চা

হেমন্ত হেম বরণ অর্থাৎ সোনালি রঙের ঋতু; পাকা ধানের রঙে ধন্য হেমন্ত কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার ঋতুও বটে আমরা বসন্ত ও গ্রীষ্মে যা বপন করি, হেমন্তে তার ফসল ঘরে তুলি সেজন্য ধরিত্রী মাতাকে কৃতজ্ঞতা জানাই নবান্ন করি, থ্যাঙ্কসগিভিং করি তাই কৃতজ্ঞতার রং সোনালি


বলা হয়ে থাকে, কৃতজ্ঞতাবোধ মানুষের হৃদয়কে সমৃদ্ধ করে শুধু তা-ই নয়, কৃতজ্ঞতাবোধ মানুষের সুস্থ জীবনযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে বলেও মনে করেন বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি, ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া (বার্কলে) ও ইউসি (ডেভিস)-এর যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিনিয়ত কৃতজ্ঞতাবোধের চর্চা করেন, তারা অনেক রকমের উপকার পেয়ে থাকেন যেমন:


শক্তিশালী ইমিউন সিস্টেমস এবং নিম্ন রক্তচাপ

উচ্চ স্তরের ইতিবাচক আবেগ

অধিক আনন্দ, আশাবাদ, ও সুখবোধ

অধিক ঔদার্য ও সমবেদনা

অপেক্ষাকৃত কম একাকীত্ব ও বিচ্ছিন্নতাবোধ


প্রত্যেক মানুষের জীবনে সাফল্য ও ভাল থাকার পিছনে থাকে অন্য কিছু মানুষের অবদান সর্বোপরি থাকেন জগদীশ্বর তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা যেতে পারে প্রকৃতির রূপ, রস, সৌন্দর্য, ও ঐশ্বর্যের জন্য কৃতজ্ঞতা জানানো যেতে পারে প্রকৃতিমাতাকে, অথবা নতুন একটি দিনের জন্য সূর্যকে


তবে কৃতজ্ঞতা জানাতে হয় মনে মনে, অন্তরে অন্তরে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘দয়া বলে, কে গো তুমি মুখে নাই কথা? অশ্রুভরা আঁখি বলে, আমি কৃতজ্ঞতাকৃতজ্ঞতা প্রকাশ পায় মুখের কোথায় নয়, অশ্রুভরা আঁখির ভাষায়


যখন প্রতিদিনের মেডিটেশন বা প্রার্থনায় কৃতজ্ঞতা অন্তর্ভুক্ত হয়, তখন শুধু হেমন্ত নয়, প্রতিটি ঋতুই হয় কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ঋতু; প্রতিটি দিনই হয় থ্যাঙ্কসগিভিং ডে এবং প্রতিটি দিনই হয় সোনালি দিন। 

অসীম দে
গুয়েল্ফ, অন্টারিও, কানাডা 

Popular posts from this blog

শুক্লপক্ষ ও কৃষ্ণপক্ষের চাঁদ চেনার উপায়

সীমার মাঝে অসীমের প্রকাশ — সৃষ্টিতত্ত্বের মূলভাব

অমাবস্যা ও পূর্ণিমা — চন্দ্রসূর্যের মিলন ও বিরহ তিথি

তেল মাহাত্ম্য

ঈশ্বর, প্রকৃতি ও রবীন্দ্রনাথ

রাসলীলা মাহাত্ম্য

আঁধারের রূপ ও বিপন্ন অন্ধকার

আধ্যাত্মিকতা — পাশ্চাত্য ভাবধারার আলোকে

সূর্য উপাসনা

হৃদয়-দর্পনে দেখা