তারার আলো ও হৃদয়ের আবেগ
মহাবিশ্বের দুটি অনন্য সৌন্দর্য — তারায় ভরা
রাতের আকাশ ও ভালবাসায় ভরা মানুষের হৃদয়। আকাশের সঙ্গে মানুষের এই বন্ধন আদিমকাল
থেকেই অটুট। সেই মুহূর্ত থেকে, যখন মানুষ প্রথমবার আকাশের দিকে তাকিয়েছিল, নক্ষত্রেরা তাকে মুগ্ধ করেছে, স্বপ্ন দেখিয়েছে।
একসময়, বৈদ্যুতিক আলো কিংবা বিনোদনের আধুনিক মাধ্যমের আগে, মানুষের প্রধান রাত্রিকালীন আনন্দ ছিল আকাশ দেখা। তারা মৃত্তিকায় শুয়ে
বিস্মিত নয়নে উপভোগ করত অসীম নক্ষত্ররাজির সৌন্দর্য। রাতের আকাশ ছিল এক রহস্য,
যা মানুষকে ভাবতে শেখাত, কল্পনায় ভাসাত।
নক্ষত্রের নীরব ভাষা হৃদয়কে সম্মোহিত করত, প্রশান্তি এনে দিত
অন্তরে।
কিন্তু আজ সেই সম্পর্ক ক্ষীণ হয়ে এসেছে। সভ্যতার
কৃত্রিম আলো নক্ষত্রের শুদ্ধ দীপ্তিকে ম্লান করে দিয়েছে। রাতের আকাশ এখনও প্রতীক্ষায়
থাকে, কিন্তু মানুষের দৃষ্টি আটকে
থাকে নগরীর আলোর জালে।
তবু, যদি কোনও এক রাতে কেউ তারাদের আহ্বান শোনে, বিস্মিত চোখে আকাশের দিকে তাকায়, তবে অনুভব করবে এক
অনির্বচনীয় সৌন্দর্য। তারার আলো ধীরে ধীরে হৃদয়কে ভরিয়ে দেবে প্রশান্তিতে, সৃষ্টিকর্তার অপার মহিমায় আবিষ্ট করবে মন। তখন, গভীরভাবে
কোনও এক নক্ষত্রের দিকে তাকালে মনে হবে — অন্ধকার আকাশের গভীরে স্রষ্টার এক
অপার্থিব দীপ্তি জ্বলে উঠছে।
যখন সেই পুণ্য আলোয় হৃদয় আলোকিত হবে, তখন শুনতে পাবে — তারার মাঝে
ধ্বনিত হচ্ছে এক চিরন্তন নাম, যেমনটি রবীন্দ্রনাথ শুনেছিলেন —
‘আকাশ জুড়ে শুনিনু ওই বাজে, তোমারি নাম সকল তারার মাঝে।’ ▣